ইউক্রেনে হামলায় নিহত মো. হাদিসুর রহমান আরিফের (৩৩) আর বিয়ে করা হলো না। ইউক্রেনে আটকে থাকা বাংলাদেশি জাহাজ ‘বাংলার সমৃদ্ধি’তে রকেট হামলায় তিনি নিহত হয়েছেন।
বুধবার (২ মার্চ) রাত ১০টার দিকে ইউক্রেন থেকে ওই জাহাজে থাকা অন্যরা বাড়িতে ফোন করে হাদিসুরের মৃত্যুর খবর জানায়।
বুধবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বেতাগী উপজেলা চেয়ারম্যান মাকসুদুর রহমান ফোরকান।
হাদিসুরের বাড়ি বরগুনার বেতাগী উপজেলার হোসনাবাদ ইউনিয়নের কদমতলা গ্রামে। তিনি বেতাগী উপজেলা চেয়ারম্যান মাকসুদুর রহমান ফোরকানের চাচাতো ভাই মাদরাসা শিক্ষক আব্দুর রাজ্জাক হাওলাদারের ছেলে। হাদিসুর বাংলার সমৃদ্ধি জাহাজের থার্ড ইঞ্জিনিয়ার ছিলেন।
উপজেলা চেয়ারম্যান জানান, চার ভাই বোনের মধ্যে হাদিসুর রহমান দ্বিতীয়। চট্টগ্রাম মেরিন একাডেমি থেকে ৪৭ ব্যাচে লেখাপড়া শেষ করে বাংলার সমৃদ্ধি জাহাজের থার্ড ইঞ্জিনিয়ার পদে যোগ দেন হাদিসুর।
তিনি বলেন, ‘এবার বাড়ি ফিরলেই হাদিসুরকে বিয়ে করানো হবে বলে পারিবারিকভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। পাঁচদিন আগে হাদিসুর তার মাকে মোবাইলে জানিয়েছিলেন যুদ্ধে আটকা পড়ার কথা। তখন থেকেই সবাই শঙ্কায় ছিলো, শেষ পর্যন্ত সেটাই সত্য হলো। এখন তো আরও দুশ্চিন্তায় আছি, মরদেহ দেশে আনব কিভাবে। সকালে জেলা প্রশাসকের কাছে যাব। মরদেহ দেশে আনার বিষয়ে সহযোগিতা চাইবো।’
এদিকে, হাদিসুরের মৃত্যুর খবরে পুরো বরগুনা জেলা জুড়ে শোক নেমে এসেছে।
প্রসঙ্গত, সিরামিকের কাঁচামাল ‘ক্লে’ পরিবহনের জন্য ‘বাংলার সমৃদ্ধি’ জাহাজটি তুরস্ক থেকে ২২ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দরের জলসীমায় পৌঁছায়। সেখান থেকে কার্গো নিয়ে ইতালি যাওয়ার কথা ছিল। যুদ্ধাবস্থা এড়াতে সেখানে পৌঁছানোর পরই পণ্যবোঝাই না করেই দ্রুত ফেরত আসার নির্দেশনা দেয় শিপিং করপোরেশন।
অপরদিকে, বন্দরের পাইলট না পাওয়ায় ইউক্রেনের জলসীমা থেকে বের হতে পারছিল না জাহাজটি। সবশেষ বাংলাদেশ সময় বুধবার জাহাজটিতে রকেট হামলা হয়। এতে জাহাজের মো. হাদিসুর রহমান আরিফ অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা যান। জাহাজের বাকি ২৮ জন নিরাপদে রয়েছেন বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ মেরিন একাডেমির কমান্ড্যান্ট সাজিদ হুসাইন। জাহাজটি বর্তমানে ইউক্রেনের অলিভিয়া বন্দর চ্যানেলে নোঙর করা আছে।