ইউক্রেনে আটকে থাকা বাংলাদেশি জাহাজ ‘বাংলার সমৃদ্ধি’এ রকেট হামলায় নিহত মো. হাদিসুর রহমান আরিফ (৩৩) বাড়িতে শোকের মাতম চলছে। হাদিসুরের লাশ বাড়িতে এনে দেয়ার দাবি স্বজনদের।
নিহত হাদিসুর বরগুনার বেতাগী উপজেলার হোসনাবাদ ইউনিয়নের কদমতলা এলাকায়। তিনি ওই এলাকার অবসরপ্রাপ্ত মাদরাসা শিক্ষক মো. আবদুর রাজ্জাক হাওলাদার ও আমেনা বেগমের বড় ছেলে।
বৃহস্পতিবার (০৩ মার্চ) নিহতের কদমতার বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে, পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ছেলেকে হারিয়ে পাগলপ্রায় মা-বাবা। ছেলের লাশ দেশে আনার জন্য সরকারের কাছে আকুতি জানিয়েছেন হাদিসুরের বাবা-মা।
স্বজনরা জানান, চার ভাই-বোনের মধ্যে হাদিসুর রহমান দ্বিতীয়। চট্টগ্রাম মেরিন একাডেমি থেকে ৪৭তম ব্যাচে লেখাপড়া শেষ করে বাংলার সমৃদ্ধি জাহাজের থার্ড ইঞ্জিনিয়ার পদে যোগ দেন হাদিসুর।
নিহতের ছোট ভাই তারেক ও গোলাম মাওলা প্রিন্স বলেন, ভাইয়া ইউক্রেনে আটকে থাকার কথা আগেই পরিবারে জানিয়েছিলেন। তিনি পরিবারের সবার কাছে দোয়া চেয়েছিলেন, যেন নিরাপদে বাড়িতে ফিরতে পারেন।
হাদিসুরের মা আমেনা বেগম বলেন, ‘বাজানে মোরে কইছে, এইবার বাড়তে আইয়া ঘর উডাইবে, আর ভাঙা ঘরে থাহন লাগবেনা মা। ঘরহান উডান অইলে বিয়া কইরা বউ ঘরে আনবে। মোর পোলাডার লাশটা আইন্না দ্যান, মোর পোলাডারে একনজর দেকমু, আর কিচ্ছু চাইনা।’ হাদিসুরের বাবা আবদুর রাজ্জাক হাওলাদারও একই আকুতি জানান।
বেতাগী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মাকসুদুর রহমান ফোরকান বলেন, হাদিসুর আমার চাচাতো ভাইয়ের ছেলে। পাঁচদিন আগে হাদিসুর তার মাকে মোবাইলে জানিয়েছিল যুদ্ধে আটকা পড়ার কথা। তখন থেকেই আমরা শঙ্কায় ছিলাম, শেষ পর্যন্ত সেটাই সত্য হলো। এখন তো আরও দুশ্চিন্তায় আছি, লাশ দেশে আনব কিভাবে। সরকারের কাছে লাশ দেশে আনার বিষয়ে সহযোগিতা চাই।
বরগুনা জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক শাহাবুদ্দিন আহমেদ বলেন, নিহত হাদিসুরের লাম দেশের আনার ব্যাপারে উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে কথা হয়েছে।